Category: Parijayee

আজন্মের সুখ

এই নাও টুকরো টুকরো হৃদয় আমার,
আর আমায় দিয়ে যাও – তোমার স্তব্ধতা।
এই-সব তুমি পাখি করে দিও –
কান্নাগুলো ফুল।
নিয়ে নাও যত বন্ধন – যত নিয়ম – যত শৃঙ্খল,
বে-নিয়মে – আমাকে দাও তোমার মুগ্ধতা।
এক টুকরো কাঞ্চনজঙ্ঘা।
নিঃশ্বাসে তোমার বৃষ্টি নামে,
এক নীল, – রাঙিয়ে দেওয়া বৃষ্টি।
মনে হয় – মেঘে মেঘে ঝর্ণার রং –
ঘ্রান নেমে আসে – আজন্মের সুখ।
পিঠে – বুকে এলোমেলো শীতল হাওয়া,
ভেঙে পড়ে রোদ্দুর।
আমি মেঘলা হবো – তুমি আকাশ পারে কবি।

‘আসি রে’ – আমার বিকেল

বিকেল টা অনেক্ষন একলা বসেছিল ছাদের কিনারে।
তারপর রং চটা ম্যাড়ম্যাড়ে একটা হলুদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো –
আসি রে।
বললো কিন্তু ঠোঁট নড়লো না – একটুও।

তারে তারে – জট পড়ে যাওয়া একটুরো আকাশ –
আর সেই নিঃসঙ্গ বিকেল।
ঘাড় কাত করে ইতি উতি দেখলাম।
নাঃ, একটা পানসে লোনা হাওয়া ছাড়া –
আর তো কিছুই চোখে পড়ে না।
– তবে, বললো তো! কিন্তু কাকে বললো?

বিকেল কি কাউকে সারাদিনের বারোমাস্যা শোনাতে বসেছিল?
এ সব তো কখনো ইতিহাস হয় না ;
এ সব কি কখনো ফ্রেম বন্দি হয় ?
জানি না। হয়তো হয় -।

তবে এটুকু জানি –
এখান থেকে গড়াতে গড়াতে সান্তাক্রূজ হয়ে –
তারপর ছুটি।
আরো জানি – কতটা পথ তাকে যেতে হবে ।
আরো কত বার এই মন খারাপের বার্তা দিতে হবে তাকে –
‘আসি রে’।

একটা লোনা পানসে হাওয়ায় – হলুদ স্বপ্নের মতো মুছে নিতে নিতে
ফিরে যাবে – আমার সাধের বিকেল।
কখনো আমার হাতের চুম্বন মিশে যাবে আরবের জলে –
কখনো আফ্রিকার জঙ্গল ফেলে চলে যাবে সে।

তবে –
সেই অতৃপ্ত – ক্ষয়ে যাওয়া ঝাপসা আলোয়,
এই বার্তা, প্রেমিকের মতো –
চোখ ছুঁয়ে বলে যাক – শেষ বার –
‘আসি রে’, – আমার বিকেল।


                    (অমিতাভ বাগ)

কিছু কথা

কিছু কথা – কখনও বলা হয় নি – ।
জানালার ধারে – মাথা এলিয়ে –
বৃষ্টি যখন আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দিতো –
পরতে পরতে ভিজে হাওয়ার নরম ছোঁয়া –
বড় ভালোবাসতাম।

গোধূলি হাওয়ায় – রং তুলি সাজানো ক্যানভাস –
তোমার শূন্য দৃষ্টির মতো – সাজানো শস্য ,
অথবা উষ্ণ নিঃশ্বাসের ঘ্রান
আমায় মাতাল করে দিতো –
বড় ভালোবাসতাম।

কখনও বলা হয় নি –
এখনও বলা হয় নি – কিছু কথা
ভালোবাসতাম – বলা হয় নি – ।

নিষিদ্ধ শব্দে

গৌরচন্দ্রিকায় বড় কাল ব্যয় হয় ।
রাত একটু নিশুতি হলে
কত অনিয়ন্ত্রিত শব্দ আসে – স্বপ্নের মতো
ধাতব যান্ত্রিক – গলিত সুখ বোধ অথবা অস্ফুট গোঙানি –
অভুক্ত শ্বাপদের ম্রিয়মান শীৎকার –
নিস্তব্ধ অন্ধকার – দীর্ঘ নিঃশ্বাসে – বুক ভারী হয়ে আসে।
কালপেঁচা উড়ে যাওয়া – এই সব রাতে – দ্রবীভূত কিছু
মাতালের মতো ঘুম ঘুম স্বপ্নের জট।

পাতায় পাতায় লেখনীর প্রস্তুতি – কাল ভোর হওয়ার আগে
নিয়তির চাপা আক্রোশের মতো – লালায়িত জিহ্বার
নিদারুন উচ্ছাস।
অনেকটা কাছে গেলে – সেই ধ্রুবতারা – কালপুরুষ ছেড়ে
অনেকটা কাছে গেলে –
এরকমই অনেকটা – ফেনিল রক্তিম কিছু আঁচড়ের শব্দ
ভিড় করে – অনন্ত আকাশ জুড়ে।

সেই নিষিদ্ধ শব্দের রঙে – কিছু পুবের হাওয়া –
দুহাতে – আঁচলে – শরীর ঢাকে ব্যস্ত শব্দেরা সব।
রাত ভোর হলে- কুয়াশায় – হাওয়ায় হাওয়ায় –
কাঁচা মাটির ভিজে যাওয়া নরম মনের মতো –
অথবা – এলো চুলে আগাছার অতৃপ্ত জঙ্গল –
মোমের মতো খুঁটে খাওয়া জমাট জোৎস্না।
এসব ফেলে আর ঘুম আসে না –
ঘুম আসে না বড়।

চালসের দিন

বছরে বছরে কখন যে চালসের দিন এলো বুঝলাম না।
ধোঁয়ায় – কুয়াশায় বড় সতর্ক মনে হয় –
এই অবিরাম শ্বাসকষ্ট ছেড়ে পূর্ণ মুক্তি –
হয়তো কোনোদিন পূর্ণিমার ঘ্রান –
আকাশে বাতাসে মেঘেদের নিরন্তর মন্ত্রণা –
দিকচক্রবাল জুড়ে একরত্তি বৈতরণী
অথবা – অন্ধকার – পিদিমের মিটিমিটি চাহনি।

তবুও অগ্রাহ্য করি – একঘেয়ে টিক টিক –

যদি কখনও বা উল্টো গোনার সাহস সঞ্চয় করি হঠাৎ –
– আবার শুনবো একমনে –
টিক টিক টিক……..।

Announcements

  • আপনাদের আশীর্বাদে আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ অষ্টম বর্ষ অতিক্রম করলো। আমরা আমাদের এই site টি নতুন ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। আপনাদের মতামত জানান আমাদের email এ (info@amarbanglakobita.com)। বিশদ জানতে contact us menu দেখুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
  • আনন্দ সংবাদ! আমাদের এই site এ এবার থেকে গল্প, অনু গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস প্রকাশিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

Recent Comments

Editorial Choice