বেলা-অবেলার কিছু পরিচয় –
আজও ক্ষনিকের সরণি ছাড়িয়ে,
মেদুর পাকদণ্ডী পথ বেয়ে
ছুঁয়ে ফেলে নিবিড় শিখরদেশ।
গল্পবলা এক বিকেলের হাত ধরে –
মাখে অস্তরাগের আলো,
মূলতানী রঙ নিয়ে খেলা করে
অনন্ত ইছামতীর জল।
একলা মানুষের আকাশে সেদিন –
নামে জ্যোৎস্না রাতের বাদল,
শত ঝিল্লি মুখরিত প্রান্তর
উদার হাত বাড়িয়ে, বলে –
“একা নও বন্ধু, তুমি স্বজন,
পথের পরিচয়ে আমার প্রাণের আপন।”
দিন বুঝি শেষ হলো তবে!
পাকাধান-গন্ধ টেনে নেবো বুকে
নবান্নের আগে………
ভেবেছিলাম এ অভ্যাস আবহমান
কাস্তে…… লাঙল……জল আর
ফসলের গান ……
এক ফসল উঠে গেলে,
জমির লাগে নতুন রূপটান…
গর্ভে আবার পরের সন্তান…
নিকোনো উঠোনে আল্পনা
পৌষ লক্ষ্মীর পা আঁকা আঙিনা …
এখন ধান কাটা শেষে
বাতাসে পোড়া গন্ধ ভাসে!!
মাঠে মাঠে জ্বলে মৃত ধানগাছের শব !
হা ঈশ্বর!!! এও সম্ভব!!
হঠাৎ ধেয়ে আসা উচকিত স্বরে
এখন আর চমকে উঠি না,
পরিবর্তে একটা স্বস্তি বোধ হয়, –
গলা তুলে অস্বস্তি জানান দেবার
শক্তি, তবে এখনো আছে !
নিঝুম বনানীর গভীর প্রদেশ
সজীব রয়েছে, বোঝার জন্য –
স্তব্ধতাভেদী এমন গর্জন
মাঝে মাঝে শোনা জরুরি।
নিস্তরঙ্গ প্রবাহ সচকিত করে
শুশুকের দল মাথা না তুললে,
জীবন নদীর গতি ধারায় –
প্রাণ খুঁজে পাওয়া ভার।
বহুপূর্বে, এমন অতর্কিত শব্দ –
আকাশ – মাটি – জল চমকে
স্ফুলিঙ্গ হয়ে ছড়িয়ে পড়ত,
অরণ্যে অরণ্যে দাবানল ঘটাতো।
আজ বয়সের ছাইয়ে ঢেকেছে
অতীত তেজের সব শিখা।
তবুও, অঙ্গারের লাল আভায়
বুঝি, আগুনটা এখনো আছে।
সব ঋণ শোধ হয় না।
সচেতন গণিতের নির্ভূল পথনির্দেশ
পৌঁছে দেয় না দিগন্ত প্রসারী
সবুজ সে সম্পর্কের অসীমতায়।
মাটির স্তন্যে আজন্ম লালিত
গাছ, চিরঋণী থেকে মৃত্যুতে
মাটিতেই আশ্রয় ভিক্ষা করে।
মাটিও রাখে না ঋণের হিসাব,
অবিরাম, অনন্ত সুধা ক্ষরণেই
তার যে অপার আনন্দ !
যার ভালোবাসায় স্নিগ্ধ হয়ে
ঋণী ভাবছো নিজেরে,
সেও বুঝি ঋণী হয়েছে
অন্তরে, তোমায় সিক্ত করে।
তবু নিশিভোর সাধনা অন্তে
থাকে, উত্তরাধিকারের ঋণ –
শতাব্দী পেরিয়ে ভাষার কাছে;
আমৃত্যু শোধের পর,
প্রারব্ধের ভার তখন দিয়ে যেতে হয়
আগামী কবির হাতে।
কবির কলমে :-
(প্রারব্ধের ভার বাবা দিয়ে গিয়েছেন হঠাৎই। বাবা হয়তো জানতেন না, আমার কবিতা চর্চার গোপন কাহিনী। উৎসাহও কখনো দেননি। হয়তো পচ্ছন্দ করতেন না, বা আমার সীমিত ক্ষমতার কথা জানতেন। বাবা আজ সশরীরে থাকলেও হয়তো সংকোচে দেখাতে পারতাম না। এখন আর দ্বিধাটুকু নেই। মৃত্যু তার সীমানা মুছে দিয়েছে। " প্রারব্ধ" তাই তাঁর কাছেই ঋণী থাক। )
ঘুমের আগে দিদুর মুখে শোনা গল্প কথা –
কেমন করে ভারতবর্ষে এলো স্বাধীনতা ।
ওসব কথা আজ পুরোনো, সব গল্পই বাসি –
ইচ্ছে মতোন স্বাধীনতা ভোগ করছে ভারতবাসী ।
দেখলে সেসব ঝুঁকবে মাথা থাকলে লজ্জা শরম –
ঝুঁকিয়ে মাথা বলি কি ভাবে “বন্দেমাতরম্” ।
মা তো এখন বৃদ্ধাশ্রমে – পায়না দুধের দাম –
কোন মুখে ভাই বলবো বলো “ মা তুঝে সালাম ” ।
মিথ্যা বলার যো ছিলোনা বাবার বেতের ভয়েতে –
সবচেয়ে বড়ো মিথ্যা এখন ”সত্য মেব জয়তে ” ।
বড়ো হতে গেলে নাকি ছোটো হতে হয় –
তবে ছোটা রাজন, না ছোটা সাকিল এই নিয়ে সংশয় ।
ভাই বললেই ভাই বুঝিনা, দাদা বললেই দাদা –
মাফিয়া – শাসক – সমাজবিরোধী, বড্ডো কঠিন ধাঁধা ।
জাতি দাঙ্গা, গোষ্ঠী দাঙ্গা, আর উগ্রপন্থী – জর্জরিত প্রান –
কিভাবে বলি বলোতো “ মেরা ভারত মহান ” ।
বর্তমান কে করছে ধংস রাজনীতির অভিশাপ –
তবুও বুকে ভরসা অটল “হাম হোঙ্গে কামিয়াব ” ।
কোটি কোটি লোক পায়না খেতে, লাখে বাস্তুহারা –
তবুও নাকি ” সারে জাঁহাসে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা “ ।।
Recent Comments