হৃদয়ভাঙা কাঁচবৃষ্টি শেষে

হাসান ইমতি

May 30, 2015
Comments: 0

বালুচরী ঘাগরা পরা পাহাড়ি মেয়েদের মরাল গ্রীবা
ছুঁয়ে পৃথিবীর বুকে তখনো সন্ধ্যা নামেনি আলোর
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার উদযাপনে আয়োজকের ভূমিকায়…

আকাশের নীল চোখে চোখ রেখে সগর্বে দাড়িয়ে থাকা
দেবদারু গাছের পাতারা তখনো সাঁঝের আঁধারের
প্ররোচনায় বিসর্জন দেয়নি তাদের সবুজ সতীত্ব …

উদরপূর্তির খাদ্য ও প্রজননের জৈবিক তাড়নায় বেঁচে
থাকা খেচরেরাও আলোকিত দিনের সঞ্চয় শেষে আঁধারের
আহ্বানে তখনো তাদের নীড়ের উষ্ণতার আলিঙ্গনে ফেরেনি …

সমস্ত অতীত পিছুটান নিঃশেষে মুছে দিয়ে আয়েশকে সুখ
ভেবে স্বার্থপর ভাবনায় হৃদয় ভাগ করে তোমার নির্বিকার চলে
যাওয়ার শূন্যতায় নিমগ্ন আমার একান্ত চেতনার এই বিকেল
তবুও কেবলই বরফ যুগের মৃত স্মৃতির শ্বেত বিগলিত প্রস্রবণ …

হৃদয়ভাঙা কাঁচবৃষ্টি শেষে করাল মৃত্যুর মত এমনই এক
পরিত্যক্ত পাথর বিকেলের বিষণ্ণ ছায়াপথ মাড়িয়ে
চঞ্চল মৃগয়া শরীরের উপহার নিয়ে বহুজন্ম পরে
তুমি আবার ফিরে এলে আমার শীতলতার বাহুডোরে…

যে ঠিকানা একদিন আমাদের একান্ত নিজস্ব ছিল,
যে ঠিকানা একদিন আমাদের সুখের ঠিকানা ছিল,
যে ঠিকানা কেবল আমাদেরই থাকার কথা ছিল,
হৃদয় ভাগ করে নিয়ে তুমি সব এলোমেলো করে সে
ঠিকানা পেছনে ফেলে একদিন তুমি চলে গিয়েছিলে
আজ কর্পূর সুখের ডানা ভেঙে বড় বেশী অসময়ে,
বড় বেশী দেরী করে, বড় বেশী অনাহুতের মত
পরাজিত হৃদয় নিয়ে অন্তিম আশ্রয়ের খোঁজে তুমি
ফিরে এলে আমার অসহায় একাকীত্বের কাছে,
এখানে আজও তোমার ফেলে যাওয়া মৃত সংসার আগলে
রেখে বেদনাসিক্ত স্মৃতির সাথে আমার একান্ত বসবাস,
এখানে শারীরিক বেঁচে থেকেও তুমি এক মৃত ভাবনার নাম,
এখানে মৃত পেন্ডুলামে সময় থেমে আছে বহু জন্ম ধরে,
এখানে আজ বরাহুত সুখের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ,
এখানে আজ আর কোন স্বপ্নের রসদ বেচে পড়ে নেই ।

Subscribe to our Newsletter